উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) থেকে: বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দেবার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে খাদিজা খাতুন (৩৫) ওরফে প্রভাতী এবং তার ভাশুর মোখলেছুর রহমানকে (৩৬) প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশ। খাদিজা উপজেলার বাখুয়া গ্রামের জলিলুর রহমানের স্ত্রী এবং মোখলেছুর রহমান একই গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। এই দুই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা সমাজসেবা, মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের দেওয়া সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দেবার কথা বলে ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। সব মিলিয়ে এই এদের বিরুদ্ধে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়েছে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে উল্লিখিত দুই ব্যক্তি এলাকার লোকজনকে বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধার কার্ড করে দেবার কথা বলে প্রায় ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে এদের বিরুদ্ধে থানায় দেওয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও জানান, এ বিষয়ে ইতোপূর্বে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এলাকার ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে তিনি (নির্বাহী কর্মকর্তা) থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দেন। পরে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বাখুয়া গ্রামের মোঃ মোস্তফার স্ত্রী রেজেদা খাতুন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে উল্লিখিত ব্যক্তিদের নামে উল্লাপাড়া থানায় একটি প্রতারণার মামলা দিয়েছেন। এরপরই খাদিজা ও মোখলেছুরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মোতালিব হোসেন জানান, গ্রেপ্তার খাদিজা খাতুন ইতোপূর্বে সমাজসেবা বিভাগ থেকে নারীদের ঋণ প্রকল্প এর বাখুয়া মাতৃ কেন্দ্রের সম্পাদিকা হিসেবে কাজ করতেন। এ কাজে সহযোগিতা করত তার নিজের ভাশুর মোখলেছুর রহমান। সেই সুবাদে তিনি সাধারণ লোকজনকে সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের ভাতার কার্ড করে দেবার কথা বলে মানুষের কাছে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তাদের কাছে অভিযোগ আসে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দু'বছর আগে খাদিজাকে সম্পাদিকার দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তারপরেও এদের অপকর্ম থামেনি।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ উজ্জল হোসেন জানান, এলাকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার খাদিজা খাতুন ও মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া উল্লাপাড়ার সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারণার শিকার না হন তার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি গণবিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।